Ticker

6/recent/ticker-posts

পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের নকশী কাঁথার মাঠ

পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের নকশী কাঁথার মাঠ

মারুফ ওয়েসিস : ১৯২৭ সাল। পল্লী কবি জসীমউদ্‌দীনের (১৯০৩-৭৬) তখন বি এ পরীক্ষা দেবার কথা। নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে চিঠি পেলেন মোহাম্মদী পত্রিকার বিশেষ সংখ্যার জন্য একটি গাথা কবিতা পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে। ময়মনসিংহের গ্রামে গ্রামে যখন ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন গ্রাম্য গানের খোঁজে, তখন থেকে মনের মধ্যে একটি ছবি আঁকা ছিল- গাছপালা ধান খেতের মাঝখানে ‘সুন্দর সুন্দর হলুদ-বরানী চাষী মেয়েদের’। তারা ‘চকিত-হরিণীর মতো’ বিদেশী যুবককে দেখে ‘বিজলি-ঝলকে’ লুকিয়ে পড়তো। কেউ কেউ আবার ডাগর ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকতো বহুক্ষণ ধরে। তখনই মনে একটি আখ্যান জন্ম নেয়। এক গাঁয়ের মেয়ের সঙ্গে আর এক গাঁয়ের ছেলের ভালোবাসা।
ঘোরাঘুরির মধ্যে নানা ধরনের ছেলে মেয়েকে দেখতে দেখতে সেই গল্পের চারা গাছ বাড়তে থাকে।
নৃপেন্দ্রকৃষ্ণের আমন্ত্রণ পেয়ে গল্প এবার কাব্যের রূপ নিতে শুরু করলো। সামনেই পরীক্ষা, তার ওপর কলেজে পার্সেন্টেজের সমস্যা, সুতরাং কামাই করার উপায় নেই। রাত জেগে চললো লেখা। দিনের বেলায় ক্লাসে বসে মন থাকতো না অধ্যাপকদের বক্তৃতায়, কাহিনীর পরবর্তী অংশে কী হবে তাই নিয়ে তিনি তখন চিন্তিত। গ্রাম্য কলহের বর্ণনা দেয়ার সময় সবচেয়ে অপ্রস্তুত লাগছিল, যে হাত দিয়ে করুণ ও মধুর রস বেরিয়েছে সেই হাত থেকে বীর রসের বর্ণনা বেরুবে কী করে? ছোটো ভাই নূরউদ্‌দীন সেদিন দেরি করে বাড়ি ফিরেছিল, অগ্রজের অধিকারে তাকে বেদম পেটালেন। তাতেই মনের কমনীয় ভাব দূর হয়ে বীর রসের পথ প্রশস্ত হলো। সাত-আট রাত জেগে লিখেছিলেন নকশী কাঁথার মাঠ।
দুঃখের বিষয়, মোহাম্মদী তা ছাপেনি। কবিতার আকার দেখেই তাঁরা পিছিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু জসীমউদ্‌দীন তাতে দমেননি, কারণ ততোদিনে কবি হিসেবে তাঁর মনে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস এসে গেছে। মোহাম্মদী ছাপেনি তো কী হয়েছে, প্রবাসীতে ছাপাবে মনে করে অবিলম্বে পাঠিয়ে দিলেন সেখানে কবিতাটি। আর এক কপি পাঠালেন দীনেশচন্দ্র সেনের কাছে।
দীনেশবাবু পড়ে মুগ্ধ, বললেন, পত্রিকায় ছাপাতে হবে না, ওরা ছাপলেও খুব ছোট ছোট অক্ষরে ছাপবে, তার চেয়ে ভালো, বই করো। নিজেই দায়িত্ব নিলেন কলকাতার তখনকার সবচেয়ে বড় প্রকাশক গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্সকে দিয়ে বইটি ছাপাবার। দীনেশবাবুর সুপারিশে গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্সের হরিদাসবাবু ছাপতে রাজি হলেন এবং তাও শরৎচন্দ্র ও দীনেশবাবুকে যে হারে রয়্যালটি দিতেন সেই একই হারে।
বইয়ের ছবি আঁকার দায়িত্ব দেয়া হলো শিল্পী রমেন্দ্র চক্রবর্তীকে।




যদিও রমেন্দ্র চক্রবর্তী জসীম উদ্‌দীনের বন্ধু, তা হলেও শহুরে শিল্পীদের ওপর তাঁর ভরসা ছিল না। তিনি লিখেছেন, ‘সেকালে কোনো শিল্পীই গ্রাম জীবনের ছবি ভালোমতো আঁকিতে পারিতেন না।’ তার ওপর রমেন্দ্র কখনো পূর্ব বাংলায় যাননি। তিনি যে ছবিগুলো আঁকলেন তাতে গ্রাম্য মেয়ে কলশী মাথায় জল আনতে যাচ্ছে, শহরের আধুনিকা মেয়ের মতো দুই হাঁটুর ওপর কাঁখে করে, কাঁথা পেতে তার ওপর বসে সেটা সেলাই করে। বলা বাহুল্য, রমেন্দ্র চক্রবর্তীর বাস্তব অভিজ্ঞতাবর্জিত সেইসব ছবি জসীম উদ্‌দীনের পছন্দ হয়নি।
ছাপতে দেয়ার আগে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে তিনি পাণ্ডুলিপি পড়ে শোনান। লেখার যেখানে সেখানে আধুনিক প্রকাশভঙ্গিমা দেখতে পেলেন অবনীন্দ্রনাথ সেখানে বদলাতে বললেন, নিজে গদ্য-ছন্দে বলে গেলেন কোথায় কী পরিবর্তন করতে হবে। দীনেশবাবু যেমন প্রশংসা করেছিলেন, অবনীন্দ্রনাথ তা করেননি, বললেন, ‘মন্দ হয় নাই। ছাপতে দাও।’ কিন্তু অবনীন্দ্রনাথের সংশোধন জসীম উদ্‌দীনের মনঃপূত হয়নি। ‘অবন বাবুর সমস্ত নির্দেশ গ্রহণ করলে তার ও আমার রচনায় মিলিয়া বইখানা একটি অদ্ভুত ধরনের হইতো।’ [জসীমউদ্‌দীন ঠাকুরবাড়ির আঙিনায়, পলাশ প্রকাশনী, ২০০৩, পৃ. ৫১]।
অবনীন্দ্রনাথ ইঙ্গিতে ছবিগুলো এঁকে দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু জসীমউদ্‌দীন কথাটা ধরতে পারেননি। গগনেন্দ্রনাথও রাজি ছিলেন তাঁর বইয়ের ছবি আঁকতে, কিন্তু অসুখে পড়ে যাবার জন্য তার পক্ষে আঁকা সম্ভব হয়নি। শেষে যখন কিছুতেই ছবি হচ্ছে না, তখন অবনীন্দ্রনাথের পরামর্শে জসীম উদ্‌দীন তাঁর সংগৃহীত গ্রাম্য গানের বিভিন্ন পদ বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের শুরুতে জুড়ে দিলেন। অবনীন্দ্রনাথের মতে তাই ছবির কাজ করবে।
নানা ধরনের পরামর্শ দেয়া ছাড়াও অবনীন্দ্রনাথ নকশী কাঁথার মাঠের ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন, এমনকি প্রচ্ছদও আঁকলেন। কিন্তু ছবির রেখাগুলো এতো সূক্ষ্ম এবং রং এতো হালকা হয়েছিল যে তার ব্লক করলে ছাপায় ভালো আসতো না, সেইজন্য প্রকাশক সেটা বাদ দিতে বাধ্য হলেন। (সম্ভবত ওই ছবিই পরে জসীমউদ্‌দীনের নকশী কাঁথার মাঠ : সমালোচনা গ্রন্থের প্রচ্ছদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে)। শেষ পর্যন্ত মনীষীদের আঁকা প্রচ্ছদ নিয়ে বই বের হলো।
ছাপা হবার সময় প্রুফ দেখে দিয়েছিলেন বিভিন্ন জনে এবং তারা সকলেই বিখ্যাত মানুষ। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দীনেশচন্দ্র সেন তো বিখ্যাত ছিলেনই, তৃতীয়জন আব্দুল কাদিরও পরে ছান্দসিক ও কবি হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন।
ছবি ইত্যাদি ব্যাপার নিয়ে বই ছাপায় দেরি হচ্ছিল দেখে দীনেশচন্দ্র সেন অধৈর্য হয়ে চিঠি দেন জসীমউদ্‌দীনকে, ‘তোমার ‘নকশী-কাঁথার মাঠ’ বইখানা আমি বেঁচে থাকতে ছাপিয়ে ফেল। আমি মরে গেলে আমার মতো করে অন্য কেউ তোমার বইয়ের সমালোচনা করবে না। তোমার বই ছাপা হলে আমি তার ওপর এক বিস্তৃত সমালোচনা লিখবো।
তাতে বাংলাদেশের পাঠক সমাজে তোমার বইয়ের কদর হবে।’ (জসীমউদ্‌দীন, স্মরণের সরণী বাহি, পলাশ প্রকাশনী, ২০০০, পৃ. ২০)। দীনেশবাবুর শরীর ভালো নেই তখন। ওই অবস্থাতেই দেখেছিলেন প্রুফ। গ্রন্থকারের নিবেদনে জসীমউদ্‌দীন লিখতে চেয়েছিলেন বইটি ছাপা হবার পিছনে দীনেশবাবুর উৎসাহদান ও সাহায্যের কথা। কিন্তু তিনি মানা করলেন এই মনে করে যে তাঁর শত্রুপক্ষরা তা হলে জসীম উদ্‌দীনের বইকেও ছেড়ে কথা বলবে না। বাস্তবিকই পরে তাই হয়েছিল যখন জসীমউদ্‌দীনের পরবর্তী বই সোজনবাদিয়ার ঘাট বের হয়।
নিজের প্রথম বই উৎসর্গ করেছিলেন দীনেশবাবুকে। দ্বিতীয় বই কাকে উৎসর্গ করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। বন্ধু আব্দুল কাদির পরামর্শ দিলেন, দীনেশবাবুর পরেই তাঁর জীবনে যার সাহায্য সবচেয়ে বেশি সেই কাজী নজরুল ইসলামকে নকশী কাঁথার মাঠ উৎসর্গ করতে। শুনে নাকি জসীম উদ্‌দীন রেগে গিয়েছিলেন বন্ধুর ওপর। পরে সেই বন্ধুকেই উৎসর্গ করেন বইটি, আর এক বন্ধু আব্দুল মজিদের সঙ্গে পরের সংস্করণগুলোতে যে কোনো কারণেই হোক এই উৎসর্গপত্র বাদ গেছে। প্রচ্ছদও পালটে গেছে। জয়নুল আবেদিনের প্রচ্ছদ এসেছে মূল প্রচ্ছদের জায়গায়। ভিতরের পাতায় যুক্ত হয়েছে হাশেম খানের অলংকরণ।
একই গাঁয়ের দুই তরুণ-তরুণী রূপা ও সাজু পরস্পরের প্রেমে পড়ে। বিয়েও হয় দুজনের। কিন্তু বেশিদিন স্থায়ী হয়নি তাদের এই সুখ। জমির ধানকাটা নিয়ে গ্রাম্য বিবাদে জড়িয়ে পড়ে রূপা। খুনের দায়ে গ্রাম থেকে ফেরার হতে হয় তাকে। মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পরেও রূপা আর ঘরে ফেরেনি। সাজু কতোদিন স্বামীর ঘরে একা পড়ে থাকবে? গ্রামের মানুষেরা তাকে তার মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়। একাকিনী সাজুর সময় কাটে স্বামীর স্মৃতিতে নকশী কাঁথা সেলাই করে। ছুঁচ-সুতোয় ফুটিয়ে তোলে সে তাদের জীবনের চিত্র। দুঃখ অবসাদে ক্রমে তার শরীর ভেঙে পড়ে। তখন সে মাকে বলে, এই কাঁথাখানি বিছাইয়া দিও আমার কবর পরে,
ভোরের শিশির কাঁদিয়া কাঁদিয়া এরি বুকে যাবে ঝরে!
সে যদি গো আর ফিরে আসে কভু, তার নয়নের জল,
জানি জানি মোর কবরের মাটি ভিজাইবে অবিরল।
বহুদিন পর রাতের আঁধারে রূপা ফিরে আসে রুগ্‌ণ অসুস্থ দেহে। সকালে উঠে গ্রামের মানুষ দেখলো সাজুর কবরের ওপর ‘রোগ পাণ্ডুর একটি বিদেশী মরিয়া রয়েছে হায়!’-
সারা গায় তার জড়ায়ে রয়েছে সেই নকশী-কাঁথা,-
আজো গাঁর লোকে বংশী বাজাইয়া গায় এ করুণ গাথা। কাহিনীটি খুবই সরলরৈখিক, তবু এমন দরদ তার প্রতিটি ছত্রে যে পড়লে চোখ ভিজে যায়। সোজনবাদিয়ার ঘাট জসীমউদ্‌দীনের আরো পরিণত রচনা, তা সত্ত্বেও তাঁর নামের সঙ্গে যে বইটি অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে গেছে তা হলো এই নকশীকাঁথার মাঠ।
কিন্তু ১৯২৯ সালে যখন বইটি ছাপা হয়েছিল, প্রথম প্রথম তেমন সাড়া মেলেনি। প্রকাশক চিন্তিত ছিলেন খই বিক্রি হচ্ছে না দেখে। জসীম উদ্‌দীন গিয়ে তখন ধরেন দীনেশচন্দ্র সেনকে। দীনেশবাবু তাঁর পূর্ব-পরিকল্পনা মতো বারো-তেরো পৃষ্ঠার এক দীর্ঘ সমালোচনা লিখে ‘বিচিত্রা’ পত্রিকায় ছাপতে দেন। সেই লেখা পড়লেই বোঝা যায়, এই বইয়ের পিছনে দীনেশবাবু ও অবনীচন্দ্রনাথের যে জোরালো সমর্থন ছিল তার কারণ শুধু জসীমউদ্‌দীনের প্রতি স্নেহই নয়। এই দুই প্রাজ্ঞ মানুষ বুঝেছিলেন যে, বাংলা সাহিত্য ইংরেজির প্রভাবে ক্রমশ যেভাবে ঐতিহ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল তাতে এই রকম একটি লেখার দরকার ছিল।
দীনেশবাবুর লেখার গোড়াতেই সেই কথা আছে, ‘ইংরেজি সাহিত্যের প্রভাবে বাঙ্গালি ভাষার শ্রী উল্টিয়া গিয়াছে। যেমন আজকাল দুধে ভেজাল, ঘিয়ে ভেজাল, মধুতে ভেজাল, মিঠাইয়ে ভেজাল, তেমনই এখন সাহিত্যে ভেজালের ছড়াছড়ি, এমন যে তিলোত্তমা, তাতেও নাকি রেবেকার ভেজাল আছে। উর্ব্বশী পড়িতে পড়িতে হঠাৎ এপিপ সাইকিডিয়ান মনে পড়িয়া যায়। ইংরেজি সাহিত্য ইংরেজি সমাজ আমাদের বাঙ্গলা সাহিত্য ও বাঙ্গলা সমাজের গায়ে যে দাগ দিয়া যাইতেছে, তা বড় স্পষ্ট এবং সময়ে কলঙ্ক স্বরূপ।’ (জসীমউদ্‌দীনের নকশী কাঁথার মাঠ সমালোচনা, পলাশ প্রকাশনী, ১৯৯৮, পৃ. ৯)।
আমেরিকা প্রবাসী লেখক ধনগোপাল মুখোপাধ্যায় যিনি নিজের লেখালেখির মাধ্যমে বিদেশে বাংলার সংস্কৃতি প্রচারে সচেষ্ট ছিলেন, ১৯৩০ সালে শুধু রাখালী এবং নকশী মাঠ পড়েই জসীমউদ্‌দীন সম্পর্কে রায় দিয়েছেন, দঞযবৎব ধৎব ভব িযিড় পধহ বয়ঁধষ ুড়ঁ (রহ ধহু পড়ঁহঃৎু) রহ ঃযব ড়িৎষফ.্থ (প্রাগুক্ত, পৃ.৬০)।
তবে ধূর্জটি প্রসাদ মুখোপাধ্যায় আব্দুল কাদিরকে লেখা চিঠিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জ্ঞাপন করেছিলেন নকশীকাঁথার মাঠ সম্পর্কে। এর এক একটি স্বর্গ ধরে আলোচনা করে চমৎকার সুন্দর অনবদ্য ইত্যাদি প্রশংসাবাক্য উচ্চারণ করতে করতে ষষ্ঠ স্বর্গে পৌঁছানোর পর, ‘মাঠের রাখাল, বেদনা তাহার আমরা কি এতো বুঝি?/যে ব্যথা সে মনে ধরিতে পারেনি সে ব্যথা বাঁশীতে ঝরে’ পড়ে। তাঁর মনে হয়েছে, ‘এই লাইন কয়টি দম ফুরিয়ে যাবার চিহ্ন’। সপ্তম, অষ্টম, একাদশ, চতুর্দশ স্বর্গের প্রশংসা করেছেন, কিন্তু আবার দ্বাদশ স্বর্গ বেসুরো লেগেছে তাঁর কাছে। সব মিলিয়ে তাঁর অভিমত, ‘ঊীয়ঁরংরঃব্থ অর্থাৎ অতি সুন্দর। যে জায়গায় তাঁর আপত্তি ছিল তা হলো, ‘কথার ঠাস বোনা আলগা কেন হবে? কেন বিধশ ষরহবং থাকবে?’ এর মূল কারণ তাঁর মনে হয়েছে ‘সচেতন ও সজাগ বুদ্ধির অভাব’। শেষে লিখেছেন, ‘জসীম এখনো সংযত হয়নিঃতবু সে কবি, সত্যিকারের কবি, এতে সন্দেহ নেই। ধূর্জটিপ্রসাদের ওই চিঠি আব্দুল কাদির তাঁর সম্পাদিত জয়তী পত্রিকায় (বৈশাখ-আষাঢ় ১৩৩৮) ছেপেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে ইতি টানার আগে বলা দরকার যে, দীনেশবাবুর প্রশংসাসূচক সমালাচনা বেরুতেই বইয়ের বিক্রি বেড়ে গিয়েছিল। পরে ইংরেজি এবং ইতালিয়ান ভাষাতে অনুবাদ হয়েছে বইটির। ইতালিয়ান অনুবাদক মারিনো রিগান ১১ মার্চ ১৯৮২ ‘সচিত্র স্বদেশ’ পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ‘নোবেল পুরস্কার পাওয়ার সব রকম গুণাবলীই নকশী কাঁথার মাঠে ছিল।’