Ticker

6/recent/ticker-posts

আমার স্মৃতিতে অজিতদা সরদার ফজলুল করিম

আমার স্মৃতিতে অজিতদা
সরদার ফজলুল করিম

উনিশশো বায়ান্ন সাল। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের দোতলায় ভাষা আন্দোলনের আমরা কতিপয় বন্দি দীর্ঘ কারাবাসের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। মাস কটি মনে নেই, সম্ভবত হেমন্তের শুরু। শীতের একটু ছোঁয়া লাগছিল, একটু মনে পড়ে। আমাদের ওয়ার্ড অনেকটা ফাঁকা অনেকেই ছাড়া পেয়েছেন। বৈকালিক চায়ের পর্ব শেষে ওয়ার্ডের সামনে প্রশস্ত মাঠে সবাই পায়চারি করছিলাম। হঠাৎ দেখা গেল, রাজবন্দিদের কাজে নিয়োজিত সিপাই কাদের কিছু বই ও অন্যান্য জিনিসপত্র বগলদাবা করে আমাদের ওয়ার্ডের দিকে আসছে। আহাদ ভাই (অলি আহাদ) ও চা (নারায়ণগঞ্জের খান সাহেব ওসমান আলী, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের সদস্য) এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “কাদের, কে আসছেন?” কাদের জানাল যে, দিনাজপুর জেল থেকে তিনজন রাজবন্দি এসেছে। কারা এসেছেন, তা বলার প্রয়োজন হলো না। কয়েক মিনিটের মধ্যেই পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবেশদ্বার পার হয়ে ওঁরা ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে আসতে লাগলেন। সকলেরই পরনে জেলখানার দেয়া কোরা কাপড়ের পাজামা ও হাফ শার্ট এবং বেঢপ স্যান্ডেল। যিনি সকলের আগে রয়েছেন, তাঁর গায়ে একখানা হালকা গরম চাদর আলতোভাবে জড়ানো। ফরসা, সুন্দর চেহারা, নিটোল গড়ন। বাকি দুজন বেশ স্বাস্থ্যবান, একজন উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, অপরজন কালো। পরিচিতদের সঙ্গে করর্মদন ও কুশল বিনিময় হলো। আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে এঁদের সবাইকে দেখছিলাম। অধ্যাপক অজিত কুমার গুহ, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী ও অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরীর নাম আগেই শুনেছি, দেখিনি কখনো। তাই অনেকটা কৌতূহল নিয়ে তাঁদের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। অল্পক্ষণের মধ্যেই ছটার ঘণ্টা বাজল। লক-আপের সময় হয়েছে। আমরা সবাই সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠলাম। দরজায় তালা পড়ল। পরদিন ভোর ছটায় খোলা হবে। 
খোন্দকার মোশতাক আহমদ (সাবেক রাষ্ট্রপতি), খান ওসমান আলী, টাঙ্গাইলের জনাব শামসুল হক (পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক), জনাব মোহাম্মদ তোয়াহা, জনাব অলি আহাদ, জনাব হাশিমুদ্দীন, জনাব কাজী গোলাম মাহবুব এবং জনাব আবদুল মতিনসহ আমরা আটজন তখন পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আমাদের সঙ্গে আরো তিনজন এসে যোগ দিলেন। বাকি দিনগুলো ভালোই কাটবে মনে হলো। রাতে অজিতবাবু একবার আমার পরিচয় জেনে নিলেন। বললাম, আমি ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র। 
সে রাতে আমার ভালো ঘুম হয়নি। মনে একটা মস্ত বড় আশার আলো ঝিলিক দিল। সামনের মার্চ মাসে ফাইনাল পরীক্ষা। আমার কাছে তেমন কোনো বইপত্র নেই এবং পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে কলেজে আমার ভালো পরিচয়ও হয়নি। আমার পাঠ্যতালিকার অনেক বইয়ের চেহারা আমি তখন পর্যন্ত দেখিনি। কাজেই জেলে এসে শিক্ষাজীবনের একটি বছর যে নির্ঘাত এমনিতেই খসে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে প্রায় নিশ্চিত। নোয়াখালী জেলায় চৌমুহনী কলেজে আইএ পড়া অবস্থায় ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছি। পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলাম এবং একটি বামপন্থি দলের (আরএসপি) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলাম। নোয়াখালী জেলে তিন মাস আটক রাখার পর আমাকে ঢাকা জেলে স্থানান্তর করা হয়। আমাকে বইপত্র জোগাড় করে দেয়ার মতো এই শহরে তেমন কেউ ছিলেন না। জেলে পড়াবার মতো কোনো শিক্ষকও ছিলেন না। বাইরে থাকতে ক্লাস তো তেমন একটা করতাম না। তাছাড়া কলেজে ভর্তি হয়েছি অনেক দেরিতে। মাস তিনেক ক্লাস করার পরই ভাষা আন্দোলন  শুরু হয়।
পরদিন ভোরে চা-নাশতার পর্ব শেষে অজিতবাবু এসে আমার খাটে বসলেন। আমার আর আহাদ ভাইয়ের খাট ছিল পাশাপাশি। নিয়ম ছিল প্রতিটি জানালার কাছে লম্বালম্বিভাবে দুখানা করে খাট পাততে হবে। অবশ্য লোক বেশি হলে মাঝখানেও খাট পড়ত  হাসপাতালে যেমনটি হয়। অজিতবাবু জানতে চাইলেন, আমার পড়াশোনার কি অবস্থা, পরীক্ষার প্রস্তুতি কদ্দূর ইত্যাদি। সব বললাম। আমার কথা ছিল অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। সব শুনে তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। এরপর জানতে চাইলেন আমার সাবজেক্ট। বাংলা বিশেষ পত্র নিয়েছি শুনে অত্যন্ত খুশি হলেন। রুটিন তৈরি করলেন। তিনি বাংলা এবং লজিক পড়াবেন, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী ইংরেজি এবং অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী সিভিক্স।   ইকনম্কিস পড়াবেন তোয়াহা ভাই ও আহাদ ভাই। জেল থেকে পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি চেয়ে আমাকে দিয়ে দরখান্ত লিখিয়ে পরীক্ষাসমূহের কন্ট্রোলারের কাছে পাঠালেন। ঢাকা  শহরে তাঁর সহকর্মীদের কাছে আমার পাঠ্যবইয়ের তালিকা পাঠালেন। তাঁদের বললেন, ওই বইগুলো কিনে জেল গেটে তাঁর নামে জমা দিতে। নিজের টাকায় অনেক এক্সারসাইজ খাতা আমার জন্য কিনলেন। আমার খাট সরিয়ে আলাদা করে দিলেন। একটা জালানার ধারে আমি একা  পড়াশোনায় যেন ব্যাঘাত না হয়। নিজের খাট পাতলেন পাঁচ-ছয় হাত দূরে, এক কোণে। সর্বক্ষণ যেন আমার ওপর নজর রাখতে পারেন, সে ব্যবস্থা হলো। পড়ার সময়সূচি তৈরি হলো। সকালে নাশতার পর বেলা সাড়ে বারোটা পর্যন্ত অজিত-দা পড়াবেন। মধ্যাহ্নভোজের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম। তারপর এক ঘণ্টা মোজাফফর স্যার সিভিক্স পড়াবেন, এক ঘণ্টা মুনীর ভাই ইংরেজি সাহিত্য পড়াবেন। রাতে আমি নিজে পড়ব। রাত দশটায় অবশ্যই বিছানায় যেতে হবে। 
অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই আমাদের সুদীর্ঘ আড্ডার অবসান ঘটল। এতদিন আমাদের জীবনযাত্রা ছিল অন্যরকম। সকালে নাশতার পরে তাস, ক্যারম বোর্ড অথবা দাবা নিয়ে বসে পড়তাম। আমাদের আড্ডাবাজি দেখে মওলানা সাহেবও (মওলানা ভাসানী) একদিন বিরক্ত হয়ে আমাকে লক্ষ্য করে জোর বকুনি দিয়েছিলেন, “লেখা নাই, পড়া নাই, সারাদিন আড্ডা। পরীক্ষায় ফেল মারবা শেষে বাপমায় দোষ দিব মওলানা ভাসানীর।” কয়েকদিনের মধ্যেই আমাদের ওয়ার্ড ক্লাসরুমে পরিণত হলো। সবাই বই নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেন। মুশতাক ভাই আইন পরীক্ষা দেবেন। তিনি মোজাফফর স্যারের কাছে রোমান ল পড়তে আরম্ভ করলেন। হ্যারল্ড লাসকির অ এৎধসসধৎ ড়ভ ঢ়ড়ষরঃরপং নিয়ে আহাদ ভাই তাতে ডুবে গেলেন, মাঝে মাঝে মোজাফফর স্যারের সঙ্গে এ নিয়ে বসেন। মাহবুব ভাইও বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে কিছু বই নিয়ে পড়তে লাগলেন। মুনীর ভাই বাংলায় এমএ পরীক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অজিত  দা এর মধ্যে সময় করে আবার মুনীর ভাইকেও পড়াশোনায় সাহায্য করেন। মুনীর ভাইকে বাংলায় এমএ পরীক্ষা দেয়ার জন্য অজিত-দাই উৎসাহিত করেছেন। দিনাজপুর জেলে থাকার সময়ে এ ব্যাপারে মুনীর ভাই মনস্থির করে প্রাথমিক প্রস্তুতি নেন। ঢাকা জেলে ফিরে আসার পর বইপত্র জোগাড় করে পূর্ণোদ্যমে পড়াশোনা শুরু করেন। নিজের পড়াশোনার মাঝে আমার জন্য এক ঘণ্টা ব্যয় করতেন। আবার রাতে আহাদ ভাই ও মতিন ভাইকে মাঝে মাঝে শেক্সপীয়র পড়ে শোনাতেন।
অজিত-দা ভোর চারটায় বিছানা ছেড়ে উঠে পড়তেন। এ সময়টা তিনি পড়াশোনা করতেন। তিনি বলতেন, ওই সময় একবার যা পড়েন, তা সহজেই মনে থাকে। পরবর্তী জীবনেও আমি দেখেছি, তিনি এই অভ্যাস ত্যাগ করেননি।
আমাকে পড়ানো এবং আমার পড়ার তদারকি ছাড়াও আমাদের সকলের খাওয়া-দাওয়ার তদারকির ভার তিনিই নিলেন। আমাদের ওয়ার্ডে একটা স্টোভ আনিয়ে নিলেন। রান্না হতো অনেক দূরে যেখানে আমাদের কারো যাওয়া সম্ভব ছিল না এবং অনুমতিও ছিল না। কিন্তু প্রতিদিন বাজার এলেই আমাদের ওয়ার্ডের একজন ফালতু (জেলখানায় ফাইফরমাস খাটার জন্য নিযুক্ত কয়েদি) রান্নাঘরে গিয়ে খবর নিয়ে আসত কি বাজার এসেছে। ভালো মাছ বা মুরগি হলে অজিত-দা তা ওয়ার্ডে আনিয়ে দিয়ে নিজেই রান্না করতেন। এজন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত মসলাপাতি নিজের টাকায় কিনতেন। নিজের টাকায় ঘি, ময়দা, ডিম, মাংস ইত্যাদি কিনে এনে ওয়ার্ডে পরোটা, মাংস, সিঙ্গাড়া ইত্যাদি তৈরি করে সবাইকে খাওয়াতেন। কারো হয়ত পেটের অসুখ(জেলখানায় অধিকাংশ রাজবন্দিই এই অসুখে ভুগতেন) করেছে। তার জন্য আলাদা রান্না করতেন নিজ হাতে। এ ধরনের রোগীর জন্য তিনি সাধারণত পেঁপের স্টু রান্না করতেন। তা এতই সুস্বাদু ও মুখরোচক হতো যে অন্যেরা নিজেদের ভালো ভালো খাবার ফেলে রোগীর খাবারের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়তেন।
সকালেই এই পেটের ক্ষুধা মিটানো ছাড়াও প্রতিদিন আমার জন্য আলাদা মুখরোচক গুলি তৈরি করতেন। সেটা ছিল আমার পরীক্ষার ক্ষুধা মিটানোর  জন্য। মাস চারেক সময় আছে। দু’বছরের সকল পড়া এই অল্প সময়ে পড়িয়ে একজনকে পরীক্ষার জন্য তৈরি করে দেয়া রীতিমতো দুঃসাধ্য কাজ। সেই দুঃসাধ্য তিনি সাধন করলেন। জেলখানায় অফুরন্ত সময়। তার প্রায় সবটাই ব্যয় করতেন আমার পেছনে-যতদিন আমি ছিলাম। সাহিত্য পড়াতে গিয়ে নানা উদ্ধৃতি দিতেন। রবীন্দ্রনাথের মানসী আমাদের পাঠ্য ছিল। ‘মেঘদূত’ কবিতা পড়াবার সময়ে এমন তন্ময় হয়ে যেতেন, মনে হতো, মেঘের পাখায় ভর করে পাঠক-শ্রোতা উভয়েই উড়ে চলেছেন। উজ্জয়িনী, শিপ্রা নদী, সানুমান আম্রকুট, বিন্ধ্যপদমূলের রেবা নদী, দশার্ণ গ্রাম ইত্যাদির যে কাব্যিক বর্ণনা দিতেন তা শুনতে শুনতে এক সময়ে নিজেরই অজান্তে মন উড়ে যেত অলকায়। ‘মেঘদূত’ কবিতা পড়াতে গিয়ে তিনি প্রায়ই কালিদাস থেকে উদ্ধৃতি দিতেন ‘কশ্চিৎ 
কান্তাবিরহগুরুণা স্বাধিকারপ্রমত্ত....।’ ‘মন্দাক্রান্ত ছন্দ’ বোঝাতেন। আবার সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের অনুবাদও মাঝে মাঝে আবৃত্তি করতেন :
পিঙ্গল বিহ্বল ব্যথিত নভতল, কই গো কই মেঘ উদয় হও,
সন্ধ্যার তন্দ্রার মুরতি ধরি আজ মন্দ্র-মন্থর রচন কও।
কালিদাস ছিলেন তাঁর অত্যন্ত প্রিয় কবি। পরবর্তীকালে তিনি ফয়জুন্নেসা বেগমের সঙ্গে কালিদাসের ‘মেঘদূত’  এর যৌথ অনুবাদ প্রকাশ করেন।
একদিন ছোটগল্প সম্পর্কে আমাকে নোট দিচ্ছেন। এক জায়গায় এসে রবীন্দ্রনাথের ‘দুরাশা’ গল্প থেকে একটা উদ্ধৃতি দিলেন। ভুটিয়া পল্লীতে ভুটিয়া স্ত্রী ও পৌত্রপৌত্রী নিয়ে শস্যসংগ্রহরত কেশরলালকে দেখে বদ্রাওনের নবাবপুত্রীর আক্ষেপ, “হায় ব্রাহ্মণ, তুমি তো আমার তোমার এক অভ্যাসের পরিবর্তে আর এক অভ্যাস লাভ করিয়াছ, আমি আমার এক যৌবন এক জীবনের পরিবর্তে আর এক জীবন যৌবন কোথাও ফিরিয়া পাইব” এ গল্পটি তখন পর্যন্ত আমার পড়া ছিল না। সে রাতেই ‘দুরাশা’ গল্পটি আমি বিছানায় শুয়ে পড়তে শুরু করি। অজিত-দা রাত জাগতেন না। দশটায় শুয়ে পড়তেন। দাদা আমাকে বাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আমি বিছানার কাছাকাছি টেবিলে হ্যারিকেন রেখে অজিত-দা যে দিকটায় থাকতেন সে দিকটা বইখাতা দিয়ে আড়াল করে দিই। তারপর কাগজ দিয়ে একটা চোঙ বানিয়ে মশারির ভেতর আলো ফেলে অনেকটা প্রজেক্টরের আলো প্রক্ষেপণের মতো ব্যবস্থা করে গোপনে রাত জেগে গল্পটা পড়ে নিলাম। ভাবলাম অজিত-দা ঘুমিয়ে পড়েছেন   কাজেই চিন্তার কোনো কারণ নেই। পরদিন সকালবেলা যথারীতি প্রাতঃরাশ সেরে দাদার খাটের কাছে চেয়ার টেনে পড়তে বসলাম। দাদা কোনো কথা বলছেন না মুখ ভার। আমি মাথা নিচু করে বসে আছি। জিজ্ঞেস করলেন, “কাল কত রাত অবধি জেগেছো?” আমি বললাম, “বেশি না, আপনি ঘুমানোর কিছুক্ষণ পরই ঘুমিয়ে পড়েছি।” “মিথ্যা বলছো কেন, আমি মশারির ভেতর থেকে সব দেখেছি। তুমি মশারির ভেতর আলো ফেলে অনেক রাত অবধি বই পড়েছো। এখন যদি রাত জেগে শরীর খারাপ করো, পরীক্ষা দেবে কেমন করে?” কিছুক্ষণ বকাঝকা করে তারপর শুরু হলো পড়াশোনা।

Post a Comment

0 Comments