Ticker

6/recent/ticker-posts

কিংবদন্তির খনা ও খনার বচন - পূরবী বসু

কিংবদন্তির খনা ও খনার বচন - পূরবী বসু কিংবদন্তির খনা ও খনার বচন - পূরবী বসু

নিবেদন
কথিত আছে বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারী কবি খনা । দ্বিতীয় নারী কবি রামী বা রজকিনী । তৃতীয় নারী কবি মাধবী। বাংলার চতুর্থ নারী কবি ও বাংলাদেশের প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতী ।
ছোট ছোট বাক্যে ছড়া আকারে রচিত কৃষি ও স্বাস্থ্যসম্পর্কিত খনার বচন বাংলার অমূল্য লোকশাস্ত্র। খনা বলে প্রকৃতই কেউ ছিলেন কি ছিলেন না, বা থাকলে কোথায় ছিলেন এবং কখন তার জন্ম হয়েছিল, কর্মক্ষেত্রই বা কোন অঞ্চলে ছিল তার, এসব নিয়ে নানা মত ও কিংবদন্তি থাকলেও একটি বিষয়ে কারও কোনো মতবিরোধ নেই। আর তা হলো, সময় দ্বারা পরীক্ষিত ও উত্তীর্ণ লোকশাস্ত্র ‘খনার বচন’-এর অস্তিত্ব ও গুরুত্ব । খনার বচন শস্য ও বৃক্ষরোপণ, গৃহনির্মাণ, ঋতু, আবহাওয়া, জ্যোতিষী, হোরাশাস্ত্র, পশুপালন, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি প্রভৃতি সম্বন্ধে ছড়া আকারে পরিবেশিত (প্রধানত ছন্দোবদ্ধ) বচন, যা খনা নামে বিদূষী এক নারীর রচিত বলে প্রসিদ্ধ ও জনপ্রিয় ।
বাংলা, উড়িষ্যা, আসাম, বিহারসহ ভারত ও বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রত্যন্ত অঞ্চলে, নেপালে ও তিব্বতে, বিশেষ করে গ্রামীণ লোকজনের কাছে, খনার বচন অত্যন্ত পরিচিত ও আদৃত। এইসব বচনের সবগুলো যে একই সময় রচিত হয়েছিল অথবা কোনো পরিবর্তন ছাড়া মৌলিক ছড়াগুলোই যে আজও প্রচলিত রয়েছে সে কথা কেউ বলতে পারে না। খুব সম্ভবত দুরকমই ঘটেছে। কিছু মৌলিক বচন যেমন রয়েছে হয়তো, তেমনি রয়েছে সময়ের পরম্পরায় রূপান্তরিত বচন। কিছু কিছু বচনের প্রক্ষিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এত প্রাচীন হওয়া সত্ত্বেও খনার বচনে ধর্ম, ঈশ্বর \3 তা বিস্ময়করভাবে অনুপস্থিত। অনুপস্থিত নারী-নিন্দা ও নারীর অবমূল্যায়ন। দৈনিক গার্হস্থ্য জীবনের জন্যে প্রযোজ্য বিশেষ করে কৃষিসংক্রান্ত বাস্তবধর্মী খনার বচন আজও ‘ ও কৃষি-নির্দেশনামা’ হিসেবে বাংলার সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণীয় ও সমাদৃত। কিংবদন্তির খনা ও খনার বচন গ্রন্থে খনা সম্পর্কে প্রচলিত বিভিন্ন কিংবদন্তি ও খনার বচনের বৈশিষ্ট্যসমূহ পর্যালোচনা করে বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহিত ৩০৫টি খনার বচন গ্রন্থের পরিশিষ্টে লিপিবদ্ধ করেছি।
পূরবী বসু
ঢাকা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫

Download and Comments/Join our Facebook Group