Ticker

6/recent/ticker-posts

সাপ্তাহিক হক কথা সমগ্র - মাওলানা ভাসানী

সাপ্তাহিক হক কথা সমগ্র - মাওলানা ভাসানী
সাপ্তাহিক হক কথা সমগ্র - মাওলানা ভাসানী
১২ ডিসেম্বর মউলানা ভাসানীর জন্মদিন। সংক্ষেপেই মোদ্দা কথাটা বলিঃ ভাসানী মানেই খেটে-খাওয়া মানুষের সার্বিক মুক্তির রাজনীতি, মধ্যবিত্তের জাতীয়তাবাদী--এবং ইসলাম নিয়েও-- শ্রেণিস্বার্থভিত্তিক আস্ফালন আর ভাওতাবাজি না। ভাসানীর নিচের কথাগুলো আবারও স্মরণ করি (কথাগুলো বারবার পোস্ট করার পেছনেও কারণ আছে। আর যারা এগুলোকে নিছক পুনরাবৃত্তি বলে উড়িয়ে দিতে চায়, তারা নিদেনপক্ষে ইতিহাসের অমীমাংসিত প্রশ্নসহ মানুষের মুক্তির প্রশ্নকেই ধামাচাপা দিতে চায়)ঃ
"পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, রাষ্ট্র এবং শ্রেণির প্রশ্ন উহ্য রাখিয়া যাহারা দেশ ও দুনিয়ার জুলুম ও অবিচারের কথা বলিয়া চোখের পানি ফেলেন আর কাতর হন, তাহাদের আপাতদৃষ্টিতে দরদী মনে হইলেও তাহারা আসলে জুলুম আর অবিচারের পক্ষেই অবস্থান নেন।"
এবং আবারও স্মরণ করি ভাসানীর এই কথাগুলোওঃ
"অনেকে মনে করেন অহিংসার রাজ্যে বিপ্লবী মহল কাজ করিতে পারে না। আমার মতে ধারণাটা ভুল। কারণ বিপ্লবী মন সব সময় অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-মুখর--শুধু মুখের ভাষায়ই নয়, স্থান-কাল-পাত্র ভেদে অস্ত্রের ভাষায়ও। কারণ বৃহত্তর কল্যাণের প্রয়োজনে সে আশেপাশে অপারেশন চালাইয়া থাকে, যেমনটি একজন দূরদর্শী ডাক্তার রোগীর একটি চক্ষু তুলিয়া ফেলিয়া অপরটিকে অক্ষত রাখেন। অবশ্য ইহাও সত্য যে বিপ্লবের নামে উদ্দেশ্যহীন ধ্বংস সাধন করিবার জন্য মহল বিশেষের আবির্ভাব ঘটিতে পারে। তবে তাহা একান্তই ক্ষণস্থায়ী হইয়া থাকে। খাঁটি বিপ্লবী দল তাহাদিগকে অচিরেই গ্রাস করিয়া ফেলিতে সক্ষম হয়। কিন্তু অহিংসার নামে সুবিধাবাদী মহল স্বার্থ উদ্ধার করিয়া সারিয়া উঠে এবং এমন কৌশলে জনতার ঘাড়ে চাপিয়া বসে যে অনেক মাশুলদান করিয়া তাহার কবল হইতে মুক্তি পাইতে হয়। তাই অহিংসায় ভালবাসার বাণী থাকিলেও তাহা কোনদিন বাস্তবায়িত হয় না। বিশেষ করিয়া ধনতন্ত্রবাদী সমাজব্যবস্থায় তাহা তো সম্ভব নয়ই। পক্ষান্তরে বিপ্লব যে আবেদন আর শক্তি লইয়া মানব সমাজে উপস্থিত হয়, তাহা আর কিছু বহন করুক বা না করুক, কুসংস্কার এবং শোষণের ধ্বংস প্রত্যক্ষভাবে লইয়া আসিবেই। তাই বিপ্লবে ভাওতাবাজীর কোন দ্বার খোলা থাকে না--থাকে শুধু ব্যবস্থা বিশেষের মূল্যোৎপাটন--তা যে কৌশলেই হউক।"

ডঃ আজফার হোসেনের ফেসবুক থেকে লেখাটি সংগ্রহিত।