Ticker

6/recent/ticker-posts

তাল অভিধান - মানস দাশগুপ্ত

তাল অভিধান - মানস দাশগুপ্ত
তাল অভিধান - মানস দাশগুপ্ত

মানস দাশগুপ্ত ভূমিকায় লিখছেন;
জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে অভিধান এক অপরিহার্য গ্রন্থ। বিংশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষের সর্বত্র আর পাঁচটা শিক্ষণীয় বিষয়ের মতন সংগীতও বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পঠিত হচ্ছে। দুঃখের বিষয় এই যে, সংগীতের জন্য একান্ত প্রয়ােজনীয় গ্রন্থগুলি আজও আমরা শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে পারিনি। সংগীত বিষয়ে যাঁরা প্রকৃত অর্থে জ্ঞানী কেউই তাঁদের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি সহ গবেষণা-ভিত্তিক সংগীত-গ্রন্থ রচনা করার জন্য আজও সাদর আহ্বান জানায়নি। একমাত্র ব্যতিক্রম পঃবঙ্গ সরকারের রাজ্য ‘সংগীত আকাদেমি'। সংগীতের ব্যাপক গবেষণা ও প্রকাশনার ব্যাপারে এই প্রতিষ্ঠানটি আদর্শ-স্বরূপ বলা যেতে পারে। এদেরই প্রকাশিত, সংগীতাচার্য ডঃ বিমল রায় লিখিত ও সংগীতশাস্ত্রী ডঃ প্রদীপকুমার ঘোষ সম্পাদিত, “সংগীতিশব্দকোষ” গ্রন্থটি পাঠ করে আমি অনুপ্রাণিত হই। অবশ্য তাল সংক্রান্ত একটি ছােট অভিধান রচনা করার পরিকল্পনা আমি বহু বছর আগেই নিয়েছিলাম এবং তদনুসারে তাল ও আনদ্ধবাদ্য সংক্রান্ত সত্য-মিথ্যা' জড়ানাে নানা পারিভাষিক অর্থ একটি পুরণাে খাতায় লিপিবদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু সেগুলির সত্যাসত্য যাচাই করার মতনউপযুক্তজ্ঞান ও বিচার না থাকায় খাতাটি অবহেলিতঅবস্থায় পড়েছিল। পরে বিশ্বভারতীর সংগীতভবনের গ্রন্থাগারিক শ্রীকালীপদ চৌধুরীমহাশয়ের সহযােগিতায় আধুনিককালের কিছু বিশিষ্ট সংগীত-গ্রন্থের পৃষ্ঠা ওল্টাবার সুযােগ পাই। কোনাে কোনাে গবেষণামূলক গ্রন্থের ভূমিকায় দেখি গ্রন্থ-রচনার ব্যাপারে ডঃ বিমল রায় কিংবা ডঃ প্রদীপ কুমার ঘােষের নিকট প্রত্যক্ষ ঋণের কথা লেখকগণ অকপটে স্বীকার করেছেন। ফলে, আমার খাতায় সংকলিত পারিভাষিক অর্থ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাগুলি যাচাই করে নেবার জন্য আমি ডঃ ঘােষের স্মরণাপন্ন হই । উনি শান্তিনিকেতনের সংগীতভবনে বিভাগীয় বিশেষ কাজের জন্য দু'এক দিন অবস্থান করলে আমি আমার খাতাটি তাঁর হাতে তুলে দিই। উনি দু'চারটি পৃষ্ঠা উল্টে আমার ত্রুটিগুলির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করান এবং পরে খাতাটির আদ্যোপান্ত সংস্কার করে দিয়ে শুধু যে আমায় আজীবন কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ রাখলেন তাই নয়, বহু পরিভাষা ও প্রাচীন তালের সংযােজন করে দিয়েছেন এবং সেগুলিকে উদাহরণ সহ আমায় বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমার অসাবধনতা বশত এই গ্রহে সামান্য যে দোষ-ত্রুটি আছে, পরবর্তি সংস্করণে তা দূর করার চেষ্টা করবাে।
এই অভিধান রচনার ব্যাপারে আমার নিরন্তর প্রেরণা জুগিয়েছেন আমার সহধর্মিনী সুগায়িকা শ্রীমতী মমতা দাশগুপ্তা। তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ছােট করতে চাই না।