Ticker

6/recent/ticker-posts

ঠাকুরবাড়ির বাহিরমহল - চিত্রা দেব

amarboi
ঠাকুরবাড়ির বাহিরমহল - চিত্রা দেব
দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮২৩ নাগাদ বেলগাছিয়া ভিলা কেনেন। ১৮৩৫-এ তৈরি হয় তার দোতলা। এই প্রাসাদ আর তার বাগানে দেশি-বিদেশি অভিজাতদের আমন্ত্রণ করে যে সব উৎসবের আয়োজন করতেন দ্বারকানাথ, সমকালেই তা প্রবাদে পরিণত হয়েছিল। রূপচাঁদ পক্ষীর সেই বিখ্যাত গান তো এই বাড়ি নিয়েই, ‘বেলগাছিয়ার বাগানে হয় ছুরি কাঁটার ঝনঝনি...’। সে বাগান আজ আর নেই, বাড়িও বিলুপ্তির পথে । আবার পাথুরিয়াঘাটার ঠাকুরদের তৈরি দমদম সাতপুকুরের বাগানবাড়ি ‘গুপ্ত বৃন্দাবন’ই বা কতটুকু পরিচিত? পাথুরিয়াঘাটায় যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরের ‘প্রাসাদ’ এবং ‘টেগোর কাস্‌ল’, আর তাঁর বাগানবাড়ি ‘মরকত কুঞ্জ’ আজ শ্রীহীন। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি তার সন্তানদের বিপুল সাংস্কৃতিক অর্জনের জন্যই আজ সংরক্ষণের সৌভাগ্য পেয়েছে। এই সব বাড়ির মানুষজনের ইতিহাসের মধ্যে ছড়িয়ে আছে আঠেরো শতকের শেষ থেকে উনিশ শতক জুড়ে বাংলা দেশের এক বিশিষ্ট পরিবারের কাহিনি— তার কিছুটা গল্প, কিছুটা তথ্য, তাও নানা বিবরণের জটিলতায় অস্পষ্ট। কিন্তু এটুকু নিশ্চিত বলা যায়, এই ইতিহাস ছাড়া বাঙালির আধুনিক হয়ে ওঠার বৃত্তান্ত নিতান্তই অসম্পূর্ণ।

ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল (আনন্দ) লিখে চিত্রা দেব কয়েক দশক আগেই সে বৃত্তান্ত দুই মলাটে আনার কাজ শুরু করেছিলেন। প্রায় পঁচাত্তর ছুঁই ছুঁই বয়সে, অসুস্থ ও গৃহবন্দি অবস্থায় তিনি এ বারে লিখে ফেলেছেন ঠাকুরবাড়ির বাহিরমহল। ঠাকুর পরিবারের বিভিন্ন ব্যক্তিত্বই সুপরিচিত, তাঁদের সম্পর্কে লেখাও হয়েছে অনেক। তবু যেমন আড়ালে রয়ে গিয়েছেন এই পরিবারের বহু সদস্য, তেমনই পরিচিতদের নিয়েও তথ্য কি গল্প কোনওটাই এক জায়গায় করার চেষ্টা হয়নি। বহু দিনের পরিশ্রমে সেই ছবিটাই দাঁড় করাতে চেয়েছেন চিত্রা দেব। সম্মিলিত জীবনযাত্রা থেকে একাধিক পারিবারিক বৃত্তে ছড়িয়ে পড়া ‘ঠাকুরবাবু’দের সে ছবি নিছক বাবুয়ানির নয়, সাহিত্য শিল্প সংস্কৃতির সঙ্গে সমাজকল্যাণ, আধুনিক চিন্তা ও মননের বিকাশ, জড়িয়ে আছে সবই।