![amarboi](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiIeF3E4yvNe-lOOD_MjSFNQVe-pcb2ThV2LZFdEaMz-R9P7RiwVgMY1HuLJ5OY6ldvzKkjQHTBqxMV_lvJuEYQcD0ozkdF948GY_Zf0u_lV_EDsTZypYYkxLKRswOBiJMS7-9-vnIczR8u/s800-rw/cover.jpg)
প্রতিবাদের গল্প নকশালবাড়ি
by পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায় (Editor), সাধন চট্টোপাধ্যায় (Editor)
অশোককুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন যে, উপস্থিত মুহূর্তের পৃথিবীর সঙ্গে চৈতন্যের সম্পর্কটা দ্বন্দ্বমূলক। বাস্তব আমাদের গহনে অভিঘাত তোলে। তার প্রতিক্রিয়া বিরূপ হলে চৈতন্য ভাবায় বাস্তব পরিবর্তন করা দরকার, অনুকূল হলে সে ভাল সময়টিকে ভালতর করবার মন্ত্রণা দেয়। অর্থাৎ যে বাস্তব আমাদের চৈতন্যের তার বাজাচ্ছে, আমরা চাইছি সেই বাস্তবটিকেই পালটাতে!
১৯৬০–’৬৬ সময়কালে রাজ্য তথা দেশ দেখেছে ভারত–চীন যুদ্ধ, কমিউনিস্ট পার্টি ভাগ, কৃষিক্ষেত্রে জোতদার–জমিদারদের স্বৈরাচার, বিপুল বেকারত্ব এবং এরই পাশাপাশি ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ, বিদেশে ছাত্রদের অসামান্য প্রতিবাদী রূপ। এইসব ঘটনা সেই সময়ের অধিকাংশ ছাত্র–যুব আর কিছু পুরনো কমিউনিস্টদের তন্ত্রিতে এমন নাড়া দেয়, তারা ভাবে, অনেক হয়েছে এইবার সময় নিজেকে পাল্টানো, দুনিয়া পাল্টানোর। তারা এমন সব কথা বলতে শুরু করে যা একেবারে টাটকা, নতুন কথা। এরই সঙ্গে লেখক–শিল্পীরাও তাঁদের সৃষ্টিতে ফুটিয়ে তুলতে থাকেন প্রতিবাদের নতুন অবয়ব। গল্প–উপন্যাস–কবিতায় দেখা দেয় নতুন চরিত্র, নতুন ভাষা।
কিন্তু আজ প্রায় পঞ্চাশ বছর পরেও সেই সময়–জাত গল্পসঙ্কলন ‘প্রতিবাদের গল্প: নকশালবাড়ি’ খণ্ডাকারে প্রকাশ করবার কী দরকার? জানুয়ারি ২০১৮–তে তার পরিমার্জিত সংস্করণ বাজারে ছাড়বারই বা কী হেতু? পড়বারই বা কী প্রয়োজন? প্রথম দুটি প্রশ্নের উত্তর আছে বইটির ‘পূর্বাভাষ’–এ— ‘আমাদের মনে হয়েছে, বর্তমানের অবসন্ন অন্ধকারে ঐ স্বপ্নের প্রতিবাদকে স্মরণ করা প্রয়োজন। অদ্ভুত যে আঁধার আমাদের ঘিরেছে, আমাদের চৈতন্যে যে মড়ক, তাকে প্রতিহত করতে হলে সময়ের যন্ত্রণায় শুদ্ধ প্রতিবাদকে সামনে আনা একান্ত জরুরী।’
কিন্তু তেভাগা আন্দোলন–জাত গল্প–উপন্যাসে কি প্রতিবাদ নেই? কষ্ট নেই? উত্তর খুঁজতে বুঝতে হবে নকশাল–আন্দোলনের বৈশিষ্ট্যগুলি। নকশালবাড়িই প্রথম মধ্যবিত্ত, বুদ্ধিচর্চাকারীদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় কৃষির সমস্যা, তার শোষণের চিত্রটিকে। ছাত্র–যুবদের আহ্বান করে কৃষকের সঙ্গে একাত্ম হতে। সে বলে, মারের মুখে পাল্টা সশস্ত্র লড়াইয়ের কথা। ওই আন্দোলনই প্রথম ঊনবিংশ শতাব্দীর ‘বাংলার নবজাগরণের নায়কদের’ চ্যালেঞ্জ করে। শুরু হয় চালু ইতিহাসকে বিশ্লেষণ। জেলকে জেল না ভেবে গ্রাম ভাবার কথা বলেছিল ওই ক্রান্তিকামীরা। যার ফলশ্রুতিতেই ‘নো বেল ভাঙো জেল’ স্লোগান, কারাগার ভেঙে মুক্তি অর্জনের উদ্যম।
সে সময়ের, একমাত্র সেই সময়ের গল্প–কবিতা–উপন্যাস ধারণ করে আছে নকশাল–আন্দোলনের এই মৌলিকতা। এইজন্যই, আমাদের ফিরে–ফিরে পড়তে হবে নকশালবাড়ির পথযাত্রীদের কথা বলা এই সব গল্প–আখ্যান। ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য হলেও পড়তে হবে। কারণ, বাঁচতে হলে মানুষকে তার পরিবেশকে ভাল করবার কথা ভাবতে হবেই।
by পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায় (Editor), সাধন চট্টোপাধ্যায় (Editor)
অশোককুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছেন যে, উপস্থিত মুহূর্তের পৃথিবীর সঙ্গে চৈতন্যের সম্পর্কটা দ্বন্দ্বমূলক। বাস্তব আমাদের গহনে অভিঘাত তোলে। তার প্রতিক্রিয়া বিরূপ হলে চৈতন্য ভাবায় বাস্তব পরিবর্তন করা দরকার, অনুকূল হলে সে ভাল সময়টিকে ভালতর করবার মন্ত্রণা দেয়। অর্থাৎ যে বাস্তব আমাদের চৈতন্যের তার বাজাচ্ছে, আমরা চাইছি সেই বাস্তবটিকেই পালটাতে!
১৯৬০–’৬৬ সময়কালে রাজ্য তথা দেশ দেখেছে ভারত–চীন যুদ্ধ, কমিউনিস্ট পার্টি ভাগ, কৃষিক্ষেত্রে জোতদার–জমিদারদের স্বৈরাচার, বিপুল বেকারত্ব এবং এরই পাশাপাশি ভিয়েতনামের মুক্তিযুদ্ধ, বিদেশে ছাত্রদের অসামান্য প্রতিবাদী রূপ। এইসব ঘটনা সেই সময়ের অধিকাংশ ছাত্র–যুব আর কিছু পুরনো কমিউনিস্টদের তন্ত্রিতে এমন নাড়া দেয়, তারা ভাবে, অনেক হয়েছে এইবার সময় নিজেকে পাল্টানো, দুনিয়া পাল্টানোর। তারা এমন সব কথা বলতে শুরু করে যা একেবারে টাটকা, নতুন কথা। এরই সঙ্গে লেখক–শিল্পীরাও তাঁদের সৃষ্টিতে ফুটিয়ে তুলতে থাকেন প্রতিবাদের নতুন অবয়ব। গল্প–উপন্যাস–কবিতায় দেখা দেয় নতুন চরিত্র, নতুন ভাষা।
কিন্তু আজ প্রায় পঞ্চাশ বছর পরেও সেই সময়–জাত গল্পসঙ্কলন ‘প্রতিবাদের গল্প: নকশালবাড়ি’ খণ্ডাকারে প্রকাশ করবার কী দরকার? জানুয়ারি ২০১৮–তে তার পরিমার্জিত সংস্করণ বাজারে ছাড়বারই বা কী হেতু? পড়বারই বা কী প্রয়োজন? প্রথম দুটি প্রশ্নের উত্তর আছে বইটির ‘পূর্বাভাষ’–এ— ‘আমাদের মনে হয়েছে, বর্তমানের অবসন্ন অন্ধকারে ঐ স্বপ্নের প্রতিবাদকে স্মরণ করা প্রয়োজন। অদ্ভুত যে আঁধার আমাদের ঘিরেছে, আমাদের চৈতন্যে যে মড়ক, তাকে প্রতিহত করতে হলে সময়ের যন্ত্রণায় শুদ্ধ প্রতিবাদকে সামনে আনা একান্ত জরুরী।’
কিন্তু তেভাগা আন্দোলন–জাত গল্প–উপন্যাসে কি প্রতিবাদ নেই? কষ্ট নেই? উত্তর খুঁজতে বুঝতে হবে নকশাল–আন্দোলনের বৈশিষ্ট্যগুলি। নকশালবাড়িই প্রথম মধ্যবিত্ত, বুদ্ধিচর্চাকারীদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় কৃষির সমস্যা, তার শোষণের চিত্রটিকে। ছাত্র–যুবদের আহ্বান করে কৃষকের সঙ্গে একাত্ম হতে। সে বলে, মারের মুখে পাল্টা সশস্ত্র লড়াইয়ের কথা। ওই আন্দোলনই প্রথম ঊনবিংশ শতাব্দীর ‘বাংলার নবজাগরণের নায়কদের’ চ্যালেঞ্জ করে। শুরু হয় চালু ইতিহাসকে বিশ্লেষণ। জেলকে জেল না ভেবে গ্রাম ভাবার কথা বলেছিল ওই ক্রান্তিকামীরা। যার ফলশ্রুতিতেই ‘নো বেল ভাঙো জেল’ স্লোগান, কারাগার ভেঙে মুক্তি অর্জনের উদ্যম।
সে সময়ের, একমাত্র সেই সময়ের গল্প–কবিতা–উপন্যাস ধারণ করে আছে নকশাল–আন্দোলনের এই মৌলিকতা। এইজন্যই, আমাদের ফিরে–ফিরে পড়তে হবে নকশালবাড়ির পথযাত্রীদের কথা বলা এই সব গল্প–আখ্যান। ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য হলেও পড়তে হবে। কারণ, বাঁচতে হলে মানুষকে তার পরিবেশকে ভাল করবার কথা ভাবতে হবেই।
বই নিয়ে শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক!