Ticker

6/recent/ticker-posts

মহাভারতের মহারণ্যে - প্রতিভা বসু [১৪]

amarboi
মহাভারতের মহারণ্যে
প্রতিভা বসু

১৪

তদনন্তর যজ্ঞশেষে একে একে সকলেই বিদায় নিলেন। দুর্যোধন আর তাঁর মাতুল সৌবল ময়দানবের তৈরি অভূতপূর্ব সভাটিতে বসেছিলেন। অন্যান্য অতিথি ও নৃপতিবৃন্দ ইত্যাদিরা বিদায় নিলে দুর্যোধন সভাকক্ষটি পর্যবেক্ষণ শুরু করে অবাক হয়ে গেলেন। দুর্যোধন সভামধ্যে একটি স্ফটিকময় স্থলে এসে ভীষণ লজ্জিত হলেন। তিনি সত্যি জলভ্রমে বসন উত্তোলিত করেছিলেন। পুনরায় অন্যত্র, স্থলভ্রমে জলের মধ্যে পড়ে গেলেন। একটু দূরে দাঁড়িয়ে দুর্যোধনকে সে অবস্থায় দেখে ভীম তাঁর কিঙ্করগণের সঙ্গে অতি উচ্চস্বরে হেসে উঠলেন। পরে যুধিষ্ঠিরের আজ্ঞানুসারে উত্তম শুষ্ক বস্ত্র এনে দিলেন। দুর্যোধন তার পরেও পুনরায় পূর্বের মতো স্থলভাগে জলের আশঙ্কা আর জলে স্থলের আশঙ্কা করে কেবলই ভুল করছেন দেখে ভীম অর্জুন নকুল সহদেব সকলেই উপহাস করতে লাগলেন। দুর্যোধনের পক্ষে এই উপহাস অসহ্য বোধ হচ্ছিলো, কিন্তু করবার কিছু ছিলো না। তার ওপরে সাজানো সভার কৌশলে নানাবিধ প্রতরণার সম্মুখীন হয়ে তাঁদের নিকট আরো হাস্যাস্পদ হলেন। এমনকি কৃষ্ণ পার্থ দ্রৌপদী এবং অনেক মহিলারা পর্যন্ত এমন হাস্যতরঙ্গ তুললেন যে বেদনা অপমান সব মিলিয়ে দুর্যোধন যেন আর দুর্যোধনের মধ্যে রইলেন না।

পাণ্ডবরা যদি তাঁকে নিজেদের ভ্রাতা বলেই গণ্য করতেন তবে কি তাঁরা তাঁকে এমন মর্মান্তিকভাবে উপহাস করতে পারতেন? এমনকি নববধূ দ্রৌপদী পর্যন্ত কী অশালীন ব্যবহার করলেন! দুর্যোধন একজন বিশ্ববরেণ্য রাজা, সেই সম্মানটাও তাঁকে দিলেন না ওঁরা। আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য কি তবে এভাবে নিজেদের ঐশ্বর্য দেখিয়ে অপমান করা? তাচ্ছিল্য দেখিয়ে হাস্যাস্পদ করা? দুর্যোধন তাঁদের কী ক্ষতি করেছেন? তাঁদেরও নয়, আর কারোরই নয়। পাণ্ডুরা ক্ষেত্রজ হিশাবে ক্ষত্রিয় হয়ে যে সব অন্যায় কর্ম অবলীলাক্রমে করে চলেছেন, তেমন একটি কর্মও দুর্যোধনের দ্বারা সাধিত হয়নি। জতুগৃহ দাহ করে, অতগুলো লোককে পুড়িয়ে মেরে, তাঁর নামে দোষ চাপিয়ে, ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে নিজেদের প্রচ্ছন্ন রেখে, দ্রুপদরাজার কন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় গিয়ে উপস্থিত! সবই যে বিদুর আর ব্যাসদেবের সাহায্যে হচ্ছে সেটা বোঝবার জন্য খুব বেশি বুদ্ধি খরচ করতে হয় না।

প্রত্যাবর্তনকালে দুর্যোধন নিতান্তই বিমর্ষ ছিলেন, অন্যমনষ্ক ছিলেন, তাঁর মাতুল তাঁকে চিন্তাকুলচিত্তে গমন করতে দেখে বললেন, ‘দুর্যোধন, তোমার কী হয়েছে? এরকম বিষণ্ণ মনে গমন করছো কেন?’

দুর্যোধন বললেন, ‘আমার এমন অন্তর্দাহ হচ্ছে যে আর বেঁচে থাকার বাসনা অনুভব করছি না। একটা প্রতিশোধস্পৃহায় আমি দহ্যমান হচ্ছি। পাণ্ডবরা নিজেদের জয়ী করবার জন্য কৃষ্ণের পরামর্শে এমন কোনো পাপ কিংবা দুষ্কর্ম নেই যা করতে পরাঙমুখ হয়েছে। সবাই জানে আমি তাদের ভ্রাতা। কিন্তু তারা কি জানে? ওদের সভা যে-ভাবে নির্মিত হয়েছে তাতে যে ভ্রম অনিবার্য, জলকে স্থল ভাবা, স্থলকে জল ভাবা বা বহির্গত হবার জন্য স্ফটিকভিত্তিকে দ্বার বিবেচনা করে অগ্রসর হওয়ামাত্র মস্তকে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ফিরে আসা, বা অন্য কোনো প্রতারক-দ্বারে ধাক্কা দিয়ে পতিত হওয়া, এইসব হবে জেনেই তারা অপেক্ষা করছিলো সকলের সম্মুখে আমাকে হাস্যাস্পদ করবার জন্য। এইসব হঠকারিতা আমাকে নিঃশব্দে সহ্য করতে হয়েছে। হে মাতুল! শিশুপালকে ওরা যেভাবে হত্যা করলো তা দেখে সমস্ত নৃপতিকুলই স্তম্ভিত হয়ে যেমন নিঃশব্দে ছিলেন, আমাকেও সেইরূপ নিঃশব্দেই ফিরে আসতে হয়েছে। ক্ষত্রিয়দিগের কোনো ধর্মই ওরা পালন করে না। ক্ষত্রিয়দের সম্মুখযুদ্ধই ধর্ম। যেভাবে অন্তঃপুরে ঢুকে ওরা জরাসন্ধকে মেরেছে, যেভাবে শিশুপালকে মেরেছে, সেটার নাম কি বীরত্ব? যুদ্ধ? এই অসীম ধনরাশির অধিকারী হয়েও তাদের চিত্তশুদ্ধি হলো না। হে মাতুল! কারো মর্মপীড়াই কেউ বোঝে না। একমাত্র সে নিজেই জানে সেই অপমান কী অকথ্য বেদনাবোধে একটা মানুষকে মৃত্যুর সীমানায় নিয়ে যায়। আমার বেদনা আমি আর যার হৃদয়েরই সংক্রামিত করতে পারি, আমার পিতৃহৃদয়ে যে পারবো না, তা আমি জানি। তিনি বিদুরের আনুগত্যে আচ্ছন্ন। বিদুর তাঁকে আমার প্রতিও অবিশ্বাসে বিমোহিত করে রেখেছেন। শুধুমাত্র পিতার প্রতিই বা কেন, পিতামহ ভীষ্ম, গুরুদেব দ্রোণ সকলেই বিশ্বাস করেছেন বিদুরের বাক্য। পিতা ধৃতরাষ্ট্র প্রতিপদেই পথভ্রষ্ট হচ্ছেন। পরিণত প্রাজ্ঞ হয়েও স্বীয় কার্যসাধনে যত্নবান নন। তিনি কখনো একথা ভাবছেন না, রাজাদের সর্বদাই অপ্রমত্তচিত্তে স্বীয় স্বার্থচিন্তা করাই কর্তব্য। গূঢ় কিংবা বাহ্য উপায়ে, যার দ্বারাই হোক, শত্রুকে যাতে চিহ্নিত করা যায় সেই উপায়ই গ্রহণ করা উচিত। সেই উপায়ই শস্ত্রধারীদের শস্ত্র স্বরূপ। কেউ আমার পক্ষে থাকুক বা না থাকুক, আমি আমার একার ক্ষমতা বলেই যুদ্ধ করবো। তথাপি আমি আমার সম্মান আর এভাবে আহত হতে দেবো না।’

শকুনি বললেন, ‘একথা বলছো কেন? তোমার পক্ষে আমরা সবাই আছি। তোমার ভ্রাতারা, আমি, তোমার সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু কর্ণ, তোমাদের অর্থবহ ভীষ্ম দ্রোণ সবাই। কিন্তু সেটা কথা নয়। তোমার পিতাই তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। অবশ্যই বিদুরই তাঁকে মত দেবেন না। পাণ্ডবরা এখনো তো ঠিকমতো গুছিয়ে বসতে পারেননি। সবে তো যজ্ঞ শেষ হলো।’

পিতার কথা দুর্যোধন জানেন। খুব ভালোই জানেন। যে বিদুর তাঁর আসল শত্রু, তাঁকেই তিনি সর্বোৎকৃষ্ট মিত্র বলে হৃদয়ে সবচেয়ে বড়ো আসন পেতে বসিয়ে রেখেছেন। সেই আসনে দুর্যোধনের ঠাঁই নেই। সেখানে দুর্যোধনের কোনো কথার কোনো মূল্য নেই। দুর্যোধনের নামে মিথ্যা অপবাদের কোনো শেষ রাখেননি বিদুর। জতুগৃহ যে যুধিষ্ঠিরই পাঁচটি পুত্রসহ একটি নিরাপরাধ মাতাকে এবং পুরোচনকে দগ্ধ করে, নিজেরা নিরাপদে সেখানে থেকে পাতাল পথে নেমে অন্যপথে নিরুদ্দেশ হয়েছেন, তা কি বিদুর জানেন না? নিরুদ্দেশ হয়ে কীভাবে নদী অতিক্রম করে ব্যাসদেবের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন তা-ও তিনি জানেন। সবই তো তাঁর কীর্তি। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ীই সব হয়েছে। কিন্তু সে কথা কি কারোকে বলেছেন তিনি? সকলকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানোই তাঁর কাজ। রাজা প্রজা সবার কাছে বদনাম রটাচ্ছেন দুর্যোধনের। এটা নিশ্চয়ই সৎকর্ম বা সত্য কথা নয়। কিন্তু যেহেতু বিদুর স্বয়ং ধর্ম, সেহেতু তাঁকে সকলেই বিশ্বাস করেন, তাঁর কথাই একমাত্র বলে মেনে নেন। প্রতিবাদ করে লাভ নেই। নিঃসন্দেহে বিদুরের পাঠানো লোক দিয়েই মাটির তলার পথ তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে অন্যদিকের যে পথে পাণ্ডবরা উঠে এসেছেন আকাশের তলায়, সেখানে বিদুরের পাঠানো পথপ্রদর্শকই অপেক্ষা করছিলো। বিদুরের পাঠানো যন্ত্রযুক্ত নৌকোর কাছে সেই পথপ্রদর্শকই নিয়ে এসেছিলো তাঁদের। সেই নৌকাতেই তাঁরা অপর তীরে অবরোহণ করে, বিদুরেরই মানচিত্র অনুযায়ী পথ চলে পথের সীমানায় মিলিত হয়েছিলেন দ্বৈপায়নের সঙ্গে। সমস্ত ব্যাপারটাই ঘটেছিলো তাঁর চক্রান্তে। কণামাত্রও কি তিনি জানতে দিয়েছিলেন কাউকে? বলেছেন সবই দুর্যোধনের কর্ম। এই মহাগ্রন্থে অধার্মিকের অবতারই ধার্মিকের মুখোশ পরে এইসব অপকর্ম করে বাহবা পেয়েছেন। ধৃতরাষ্ট্রের অতিশয় পুত্রবাৎসল্যের জন্যই যে এতো সব দুর্ঘটনা ঘটতে পেরেছে সে বিষয়ে কারো মনেই কোনো সন্দেহের অবকাশ রাখেননি বিদুর। অথচ ভীষ্ম-দ্রোণ-ধৃতরাষ্ট্র প্রত্যেকেই বিশ্বাস করেছেন, সব কুকর্মের জন্য দুর্যোধনই দায়ী। তথাকথিত ‘পুত্রবৎসল পিতা’ সততই ছেলের বিপক্ষে। ধৃতরাষ্ট্র যা-ই বুঝুন বা না বুঝুন, দুর্যোধন ঠিকই বুঝেছেন হস্তিনাপুরের সিংহাসনটিই পাণ্ডবদের আসল লক্ষ্য; এই লক্ষ্যপূরণের জন্যই তাঁকে হেয় করতে উঠে পড়ে লেগেছেন বিদুর এবং পাণ্ডবরা। শত্রু তাঁদের ধৃতরাষ্ট্র নন, দুর্যোধন। ক্ষমতা তাঁরা কম সংগ্রহ করেননি। বিপুল ঐশ্বর্যেরও অধিকারী হয়েছেন। আকস্মিকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে ধৃতরাষ্ট্রকে সিংহাসনচ্যুত করা আদৌ কঠিন নয়। কঠিন দুর্যোধনকে স্ববশে আনা। নিজের ক্ষমতায় অনেক উঁচুতে তিনি উঠে গেছেন। শিশুপাল বলেছিলেন, ‘এই সাগরাম্বরা পৃথিবীতে যিনি অদ্বিতীয় সেই রাজেন্দ্র দুর্যোধন তো এখানে উপস্থিত, তাঁকে স্তুতি করতে ইচ্ছা হয় না তোমার?’ এই বাক্য নিশ্চয়ই তাঁদের বুকে শেল বিদ্ধ করেছিলো। হয়তো সেই ক্রোধই এইভাবে তাচ্ছিল্যের দ্বারা কিঞ্চিৎ প্রশমিত হলো। জানিয়ে দিলো, তোমাকে আমরা ভয় পাই না, তুচ্ছজ্ঞান করি। কিন্তু সত্যিই কি তাই?

পিতা ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডবদের জন্য যখন যা করেছেন দুর্যোধন কখনো সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি বা বাধা দেননি। এই যে ধৃতরাষ্ট্র কতো সমাদর করে, কতো যৌতুক পাঠিয়ে, দৌপদীকে কুলবধূর সম্মান দিয়ে গ্রহণ করলেন, সেটা তাঁর ঔদার্যেরই পরিচয় বহন করে। পাণ্ডবরা তো তাঁকে তাঁদের বিবাহের সময়ও ডাকেননি। পাঁচজন পুরুষ একটিমাত্র মেয়েকে বিবাহ করে আর্য ও ক্ষত্রিয় সমাজের যে বিরুদ্ধাচার করলো, সেজন্যও বিন্দুমাত্র তিরস্কার করেননি। বরং তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন, গোলমালের দরকার নেই। যেমন পাঁচটি বহিরাগত কিশোরকে কুন্তীর বাক্যানুযায়ী পাণ্ডুর ক্ষেত্রজ বলেই গ্রহণ করে সব সমস্যার নিরসন করেছিলেন, এখানেও সেটাই করলেন। এবং পাণ্ডুর ক্ষেত্রজ হিশাবেই রাজ্যের অর্ধাংশ দিলেন। তা নিয়েও দুর্যোধন একটি বাক্যও উচ্চারণ করেননি। তথাপি তাঁর প্রতি এঁদের এই আক্রোশ কেন?

কেন, সেটা কেউ বলে না দিলেও বুঝে নিতে অসুবিধে হয় না। সম্পূর্ণ রাজত্বের দখল নেবার একমাত্র অন্তরায় হবেন যিনি, তাঁর নাম দুর্যোধন। দুর্যোধন বেঁচে থাকলে যুদ্ধ বিনা সাম্রাজ্য দখলের অন্য কোনো পথ নেই। অতএব, এই লোকটিকে যদি ধৃতরাষ্ট্রকে দিয়ে ত্যাজ্যপুত্র করানো যায়, বা কোনো না কোনোভাবে নিধন করানো যায়, তা হলে চোখের পলকে সরিয়ে দেওয়া যাবে ধৃতরাষ্ট্রকে। যুদ্ধকে যতোই এড়িয়ে চলা যায়, ততোই মঙ্গল। ভীষ্ম কর্ণ দ্রোণ অশ্বত্থামা যেদিকে একত্রিত হবেন, সেখানে জয়ী হওয়া দুঃসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু পিতাকে সেটা বলা না বলা দুই-ই সমান। পিতার নিকট তাঁর পুত্র দুর্যোধন যা বলবেন, তদপেক্ষা বিদুর যা বলবেন তার মূল্য অনেক বেশি। পরন্তু, পিতার নিকট দুর্যোধন যা বলেছেন তা-ও বলে দেবেন। বিদুর নিত্য পিতার নিকট বসে তাঁর পুত্রের মৃত্যুকামনা করছেন, পিতা নিঃসাড়। এক নৌকার সঙ্গে বদ্ধ অন্য নৌকার মতো তিনি বিদুর যেভাবে চালাচ্ছেন চলছেন। বিদুরই তাঁর অনুশাসক। ধৃতরাষ্ট্রের জানা উচিত, জন্মের পর থেকে ক্রমশ যেমন শরীরের বৃদ্ধি হয়, সেই রকম যে রাজা সম্পদের ক্রমিক বৃদ্ধি আকাঙ্ক্ষা করেন, তিনিই জ্ঞাতিগণের মধ্যে সমৃদ্ধ হন। পরাক্রমই তৎকালীন উন্নতির উপায়স্বরূপ। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, পাণ্ডবেরা নানা দেশের নৃপতির সঙ্গে বন্ধুতা করে, কৃষ্ণের সহায়তা লাভ করে, জরাসন্ধ আর শিশুপালকে নিধন করে, অতিশয় বলশালী হয়েছেন। উদ্বেগহীনও হয়েছেন। এখন শুধু একটু গুছিয়ে বসা। তার পরের কর্মই হবে ধৃতরাষ্ট্রকে উচ্ছিন্ন করে সম্পূর্ণ অধিকারের জন্য এই রাজ্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া। তারপর অখণ্ড রাজ্যের রাজ্যেশ্বর হয়ে সিংহাসনে উপবেশন। পাণ্ডব এবং কুরু এই দুটি নাম কার রচনা সেটা না জানলেও সম্পর্কের মধ্যে এই যে একটা শুষ্ক মরুভূমি তৈরি হয়েছে এটা বিদুরেরই অবদান। সম্পর্কের কথা বাদ দিয়েও, দুর্যোধনের মতো একজন দেশবরেণ্য রাজা যদি এই অপমান সহ্য করে, চোরের মতো ফিরে এসে চুপিচুপি বসে থাকেন, তদপেক্ষা বেশি পরাজয় আর কী হতে পারে? সেই পরাজয় আর মৃত্যু দুই-ই সমান। এর যদি কোনো প্রতিবাদ না করেন তবে তো ওরা তাঁকে সময় সুযোগ মতো সর্বদাই এভাবে তাচ্ছিল্য করবে। অপমান করবে। সুযোগ পেলে চক্রান্ত করে নিধনও করতে পারে। এরা তো কৃষ্ণের পরামর্শে সম্মুখ যুদ্ধের অপেক্ষা অন্যায় হত্যার রাজনীতিই অনুসরণ করছে। যদি সুযোগ না থাকে, সুযোগ তৈরি করে নিতে কতোক্ষণ? এই অসম্মানের জবাব তাঁকে দিতেই হবে, সেটা যে উপায়েই হোক।

চলবে...
বাকি পর্বগুলো পড়ুন এই লিঙ্কেঃ https://www.amarboi.com/search/label/mahabharatera-maharanye