Ticker

6/recent/ticker-posts

মিডনাইটস চিলড্রেন - সালমান রুশদি

Midnights Children Salman Rushdie
মিডনাইটস চিলড্রেন - সালমান রুশদি
ভারতীয়-ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক, প্রবন্ধকার সালমান রুশদির জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৯ জুন। তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস 'মিডনাইটস চিলড্রেন' ১৯৮১ সালে সাহিত্যে বুকার পুরস্কার লাভ করে। তাঁর বেশির ভাগ উপন্যাসের পটভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশকে। বইটি আসলে প্রকাশের পর থেকেই বিশ্বপাঠক সমাজে অসামান্য নাড়া দিতে সক্ষম হয়। ১৯৮১ সালে বুকার পুরস্কার পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি জেমস টেইট পুরস্কার লাভ করতেও সক্ষম হয়। উপন্যাসটির নাট্যরূপ দেয়া হয় এবং রয়েল শেকসপিয়র কোম্পানি মঞ্চস্থ করে লন্ডনে। উপন্যাসটিকে সমালোচকরা জেমস জয়েসের ইউলিসিস, গুন্টার গ্রাসের দ্য টিন ড্রাম, লরেন্স স্টার্নসের ট্রিস্ট্রাম শ্যান্ডির সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে বলেছেন, ঘটনাগুলো এমনভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যাতে মনে হতে পারে কাহিনীর এনসাইক্লোপেডিয়া যেন পাতার পর পাতা উল্টে যাচ্ছে আর পাঠক তা থেকে নির্যাসটুকু চুষে নিচ্ছে। লেখক অত্যন্ত সাবলীলভাবে রামায়ণ ও মহাভারত থেকে সহযোগিতা নিয়েছেন। নিয়েছেন সহস্র এক রাত্রির মতো রূপকথার কাছ থেকেও। আর এসব বিবেচনা করলে সহজেই মনে করতে হবে যে, পশ্চিমা ধ্যান-ধারণার বাইরে এসে একজন ঔপন্যাসিক যে অসামান্য সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন, তাতে পশ্চিমা অনেক পাঠককেই অবাক করে দিতে পারে। মিডনাইটস চিলড্রেনে দেখা যায় ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ১০০১ জন শিশু জন্মগ্রহণ করে। তাদের মধ্য থেকে এক হিন্দু মায়ের সন্তান ও এক মুসলমান মায়ের সন্তানকে আনা হয়েছে উপন্যাসের চরিত্রে। আর এই দুই সন্তানই মূলত উপন্যাসকে সমৃদ্ধতর অবস্থানে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। সালমান রুশদী এই দুই শিশুকে ত্রিশ বছর বয়স পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেছেন। আর এই দুই মানবসন্তানই দেখতে পেয়েছে ইন্দিরা গান্ধীর লৌহশাসন। ব্যক্তি মাধ্যমে জাতি ও মানবতার প্রতীক তৈরি করেছেন সালমান রুশদী। যে কারণে পাঠক সহজেই উপন্যাস পড়তে পড়তে ভারত নামক একটি দেশের জন্মকথা জানতে পারে এবং জানতে পারে মানবতাবাদের অবক্ষয়গুলো সম্পর্কেও। বলতে দ্বিধা নেই সালমান রুশদীর সৃষ্টির পথ বেয়ে ইংরেজি সাহিত্যে নতুন একটি শব্দ জোরালোভাবে প্রবেশ করেছে, আর সেই শব্দটি হচ্ছে ফতোয়া। সালমান রুশদী ভারতীয় দেব-দেবী, সেখানকার মৌলবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা, মানবাধিকার সংক্রান্ত দুর্বল দিক, রাজনীতি ও ইতিহাসকে নতুন করে শ্বেতাঙ্গ পাঠককে জানিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে ব্রিটিশ পাঠকদের কাছে তার এই পরিচিতি সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাদের একটি শ্রেণী আছে উপনিবেশগত কারণে ভারত সম্পর্কিত ঘটনাপ্রবাহ জানতে উৎসাহ বোধ করেন। অন্য একটি শ্রেণীর পাঠক আছে, যারা ঐতিহ্যকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। তাদের কাছে লেখক হয়ে পড়েন আন্তঃসাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞের সূত্রধার।