Ticker

6/recent/ticker-posts

আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী - আনিসুল হক


আনিসুল হকের উপন্যাস আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী। উপন্যাসটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মযজ্ঞের আলোকে লেখা। আনিসুল হকের লেখার শৈলী অসাধারণ বললেও কম বলা হবে। উপন্যাসের বিভিন্ন জায়গায় তিনি সোহরাওয়ার্দী, ভাসানী প্রমূখ নেতাদের মনের ভিতরের জগতটাকে তুলে ধরেছেন, সমসাময়িক ঘটনাগুলিকেও জড়িয়েছেন আষ্টেপৃষ্ঠে। অনেক পার্শ্বচরিত্রকে আলোকিত করে নায়কের মর্যাদা দিয়েছেন। পরবর্তী অনিবার্য ঘটনার সাথে পূর্বের ছোট কোন ঘটনার মেলবন্ধন খুজেঁছেন। কখনও কখনও উছলে উঠেছে আবেগ। কান্নার প্রস্তুতি নিতেই হয়তো নেতাদের চরম দূরদর্শিতা আর অসামান্য দেশপ্রেমে শিউরে উঠেছে শরীর।
উপন্যাসটি না পড়লে অনেক তথ্যই অজানা থেকে যাবে। পড়তে পড়তে যখনই চোখ ভারী হয়ে আসে, তখনই কোন ঘটনা পড়ে গা শিউরে উঠে শুকিয়ে যায় সকল অশ্রু।
উপন্যাসের কিছু কিছু অংশ...
হাত উচিয়েঁ শেখ মুজিব দেখাতে লাগলেন জানালার বাইরে। 'ওই দেখো'
'কী?'
'চাঁদ। আজ মনে হয় পূর্ণিমা। চাদেঁর আলোর চেয়ে সুন্দর পৃথিবীতে আর কী আছে বলোতো?'
চাদেঁর আলোয় মুজিব ভাইয়ের মুখখানা অপার্থিব বলে মনে হচ্ছে।
গাজীউল হকের মনে হল, এই দৃশ্য কী সত্যি হতে পারে? এই কথামালা?
........ ............ ..........
সোহরাওয়ার্দীর গণপরিষদ সদস্যপদ বাতিল করার জন্য সদস্যবিধির সংশোধনী পাস হল। । শীতার্ত দিনটিতে সোহরাওয়ার্দী নিজে উপস্থিত ছিলেন অধিবেশনে।.........একে একে সদস্যরা উঠে ভোট দিতে গেলেন। কেই সোহরাওয়ার্দীর মুখের দিকে তাকাতে পারছেন না। কারণ কিছুদিন আগে সোহরাওয়ার্দী ছিলেন এদেরই মুখ্যমন্ত্রী , এদেরই নেতা। ২৭টা বছর আইনসভার সদস্য ছিলেন। এরা সবাই কোন না কোনভাবে তার কাছে ঋণী।
স্পিকার ভোটে দিলেন।
আইন পাস হল।
সোহরাওয়ার্দীর মুখে স্মিত হাসি।
........ ............ ..........
শেখ মুজিব যুবকর্মীদের উদ্দেশ্যে কারাগারে বললেন,'তোমাদের কিছু জেলের নিয়ম কানুন শিখাইয়া দিই। সবাই যেটা করো, পকেটে ইটের টুকরা, পাথর যা পারো ভরায়া লও। ওজনটা বেশি দেখাইতে হবে। ১৫ দিন পর যখন ওজন নিতে আসবে, পকেটে আর ইট রাখবা না। যেই ওজনটা কমবো, সেইটা পূরণ করার জন্য ডাক্তার স্পেশাল ডায়েট দিবে।'
........ ............ ..........
রেনুর একটা চিঠি এসেছে। তাতে রেনু লিখেছেন, "আল্লাহর রহমতে তুমি আবার পিতা হতে চলিয়াছ। হাসু এখন অনেক কথা বলে......." এর পরে কালি মেরে কয়েক লাইন ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কারাগারবাসে অভিজ্ঞ মুজিব জানেন, এই লাইন গুলোতে ছিল অনুপ্রেরণাদায়ক কথামালা। হয়তো রেনু লিখেছে, "তুমি এই জালিম সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছো তাতে আমাদের মাথা উঁচু হয়েছে।তুমি বন্ড দিবা না।" কী জানি , কী লিখেছিল রেনু। ওই কটা লাইন পড়ার জন্য শেখ মুজিবের হৃদয় উদ্বেলিত হয়ে উঠল। তিনি কাগজে তেল লাগালেন। তারপর রোদের উল্টোদিকে ধরে পড়ার চেষ্টা করলেন।
......... ......... .........
আর দেরি কেন? সম্পূর্ণ উপন্যাসটি ডাউনলোড করে পড়ে ফেলুন। কেমন লাগলো আমাদেরকে জানাবেন কিন্তু !